(০১-পর্ব) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকিম (সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক?

(০১-পর্ব) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকিম (সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক?


 

তাহলে শুনুন

আল্লাহ তা‘আলা বলেন সূরা আল ফাতিহা (الفاتحة), আয়াত: ৬

ٱهْدِنَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلْمُسْتَقِيمَ
অর্থ: আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,
(আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে শিখিয়ে দিচ্ছেন যে, হে বান্দা তোমরা আমার নিকট সরল পথের সন্ধান চাও))

সূরা আল ফাতিহা (الفاتحة), আয়াত: ৭

صِرَٰطَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ ٱلْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ

অর্থ: সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
(১) মুন‘আম আলাইহি কারা, মাগজুব (গজব নাযিল হয়েছে) এ জা'ল্লিন (পথভ্রষ্ট) কারা তাদের পরিচয় দাও।

প্রশ্নঃ আপনি কি জানেন মুনআম আলাইহি কে?

উত্তরঃ তাহলে শুনোন! তাঁরা হলেন (১) নবী, (২)ছিদ্দীক, (৩) শহীদ ও (৪)সৎকর্ম-শীল ব্যক্তিবর্গ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন
সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৬৯

وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُو۟لَٰٓئِكَ مَعَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّنَ وَٱلصِّدِّيقِينَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَٱلصَّٰلِحِينَ وَحَسُنَ أُو۟لَٰٓئِكَ رَفِيقًا


অর্থ: আর যে কেউ আল্লাহর হুকুম এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য করবে, তাহলে যাঁদের প্রতি আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন, সে তাঁদের সঙ্গী হবে। তাঁরা হলেন নবী, ছিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্ম-শীল ব্যক্তিবর্গ। আর তাদের সান্নিধ্যই হল উত্তম।

সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৭০

ذَٰلِكَ ٱلْفَضْلُ مِنَ ٱللَّهِ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ عَلِيمًا


অর্থ: এটা হল আল্লাহ-প্রদত্ত মহত্ত্ব। আর আল্লাহ যথেষ্ট পরিজ্ঞাত।

সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৭১

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ خُذُوا۟ حِذْرَكُمْ فَٱنفِرُوا۟ ثُبَاتٍ أَوِ ٱنفِرُوا۟ جَمِيعًا

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়।

প্রশ্নঃ ঈমানদারদের পরিচয় কি?

উত্তরঃ ঈমানদারদের পরিচয় হল আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ নির্ধিদায় মেনে নেওয়া।

প্রশ্নঃআল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ কি?

উত্তরঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেন;

۟ خُذُوا۟ حِذْرَكُمْ فَٱنفِرُوا۟ ثُبَاتٍ أَوِ ٱنفِرُوا۟ جَمِيعًا

(১) নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে
(২) কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়।))

সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৭২

وَإِنَّ مِنكُمْ لَمَن لَّيُبَطِّئَنَّ فَإِنْ أَصَٰبَتْكُم مُّصِيبَةٌ قَالَ قَدْ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَىَّ إِذْ لَمْ أَكُن مَّعَهُمْ شَهِيدًا

অর্থ: আর তোমাদের মধ্যে এমনও কেউ কেউ রয়েছে, যারা অবশ্য বিলম্ব করবে এবং তোমাদের উপর কোন বিপদ উপস্থিত হলে বলবে, আল্লাহ আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন যে, আমি তাদের সাথে যাইনি।

وَإِنَّ مِنكُمْ لَمَن لَّيُبَطِّئَن
অর্থ: আর তোমাদের মধ্যে এমনও কেউ কেউ রয়েছে, যারা অবশ্য বিলম্ব করবে

(অর্থাৎ তারা অস্ত্র হাতে নিতে টালবাহানা করবে। "টালবাহানা " বিভিন্ন ধরনের হতেপারে
যথা
(১)এখনো সময় হয়নি।
(২) আমরাতো সংখ্যায় অল্প।
(৩) আমাদের কি সাহাবাদের মত ঈমান আছে।
(৪) তাদের ঈমানি শক্তি অনেক ছিল।
(৫) আমরাতো দুর্বল, আমাদের দ্বারা কি তাদের মত কাজ করা সম্ভব ?
(৬) হিকমতের সাথে কাজ নিতে হবে।
ইত্যাদি
َّ فَإِنْ أَصَٰبَتْكُم مُّصِيبَة
তোমাদের উপর কোন বিপদ উপস্থিত হলে ,

(মুজাহিদদের উপর আল্লাহর পরীক্ষা/বিপদ আসলে
মুনাফিকরা বলবে:
ٌ قَالَ قَدْ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَىَّ إِذْ لَمْ أَكُن مَّعَهُمْ شَهِيدًا
বলবে, আল্লাহ আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন যে, আমি তাদের সাথে যাইনি।))



সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৭৩

وَلَئِنْ أَصَٰبَكُمْ فَضْلٌ مِّنَ ٱللَّهِ لَيَقُولَنَّ كَأَن لَّمْ تَكُنۢ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُۥ مَوَدَّةٌ يَٰلَيْتَنِى كُنتُ مَعَهُمْ فَأَفُوزَ فَوْزًا عَظِيمًا


অর্থ: পক্ষান্তরে তোমাদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন অনুগ্রহ আসলে তারা এমন ভাবে বলতে শুরু করবে যেন তোমাদের মধ্যে এবং তাদের মধ্যে কোন মিত্রতাই ছিল না। (বলবে) হায়, আমি যদি তাদের সাথে থাকতাম, তাহলে আমি ও যে সফলতা লাভ করতাম।

মুজাহিদদের প্রতি কোন অনুগ্রহ হলে

وَلَئِنْ أَصَٰبَكُمْ فَضْلٌ مِّنَ ٱللَّهِ

অর্থ: পক্ষান্তরে তোমাদের (মুজাহিদদের) প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন অনুগ্রহ আসলে

মুনাফিকরা বলবে
لَيَقُولَنَّ كَأَن لَّمْ تَكُنۢ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُۥ مَوَدَّةٌ
তারা এমন ভাবে বলতে শুরু করবে যেন তোমাদের মধ্যে এবং তাদের মধ্যে কোন মিত্রতাই ছিল না।

যারা মুজাহিদদের সাথে অংশগ্রহণ করেনি তারা বলবে
ٌ يَٰلَيْتَنِى كُنتُ مَعَهُمْ فَأَفُوزَ فَوْزًا عَظِيمًا
(বলবে) হায়, আমি যদি তাদের সাথে থাকতাম, তাহলে আমি ও যে সফলতা লাভ করতাম।


সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৭৪

فَلْيُقَٰتِلْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ يَشْرُونَ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا بِٱلْءَاخِرَةِ وَمَن يُقَٰتِلْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ فَيُقْتَلْ أَوْ يَغْلِبْ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا

অর্থ: কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুত: যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহা-পুণ্য দান করব।

((ঈমানদারদের আরো একটি পরিচয় হল:দুনিয়ার জীবনকে পরকালের পরিবর্তে বিক্রয় করা । যারা করে তাদের কর্তব্য হল "ক্বিতাল করা"
আল্লাহ তা‘আলা বলেন
فَلْيُقَٰتِلْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ يَشْرُونَ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا بِٱلْءَاخِرَةِ وَمَن يُقَٰتِلْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ فَيُقْتَلْ أَوْ يَغْلِبْ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا

অর্থ: কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুত: যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহা-পুণ্য দান করব।

প্রশ্নঃ ক্বিতাল করলে ফায়দা কি?

উত্তরঃ মৃত্যুবরণ করুক বা বিজয়লাভ করুক আল্লাহ তা‘আলা তাকে মহা-পুণ্য দান করবেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন
وَمَن يُقَٰتِلْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ فَيُقْتَلْ أَوْ يَغْلِبْ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا

বস্তুত: যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহা-পুণ্য দান করব।))

সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৭৫

وَمَا لَكُمْ لَا تُقَٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ ٱلرِّجَالِ وَٱلنِّسَآءِ وَٱلْوِلْدَٰنِ ٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا مِنْ هَٰذِهِ ٱلْقَرْيَةِ ٱلظَّالِمِ أَهْلُهَا وَٱجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا وَٱجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِيرًا

অর্থ: আর তোমাদের কি হল যে, তেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও।

প্রশ্নঃ আপনি কি মুনআম আলাইহিদের ( যারা নে‘আমত প্রাপ্ত হয়েছে) ওদের অন্তর্ভুক্ত হতে চান?

উত্তরঃ হ্যাঁ! হতে চাই। তাহলে আপনি ওলি ও নাসিরের কাজগুলো করুন।

প্রশ্নঃ ওলি ও নাসির কারা?

উত্তরঃ যারা দুর্বল পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে লড়াই করে তারা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন
وَمَا لَكُمْ لَا تُقَٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ ٱلرِّجَالِ وَٱلنِّسَآءِ وَٱلْوِلْدَٰنِ ٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا مِنْ هَٰذِهِ ٱلْقَرْيَةِ ٱلظَّالِمِ أَهْلُهَا وَٱجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا وَٱجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِيرًا

অর্থ: আর তোমাদের কি হল যে, তেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও।


সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৭৬

ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ يُقَٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ يُقَٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ ٱلطَّٰغُوتِ فَقَٰتِلُوٓا۟ أَوْلِيَآءَ ٱلشَّيْطَٰنِ إِنَّ كَيْدَ ٱلشَّيْطَٰنِ كَانَ ضَعِيفًا


অর্থ: যারা ঈমানদার তারা যে, জেহাদ করে আল্লাহর রাহে। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের রাহে, সুতরাং তোমরা জেহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল।

প্রশ্নঃ ঈমানদার, আর কাফেরের মাঝে পরিচয়ের কোন নিদর্শন আছে কি?

উওরঃ হ্যাঁ! আছে। ঈমানদার ক্বিতাল করে আল্লাহর পথে,
আর কাফের সম্প্রদায় ক্বিতাল করে ত্বাগুতের পথে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ يُقَٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ يُقَٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ ٱلطَّٰغُوتِ
যারা ঈমানদার তারা যে, জেহাদ করে আল্লাহর রাহে। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে

প্রশ্নঃ ঈমানদারদের কাজ কি?
উওরঃ শয়তানের অভিভাবকদের হত্যা করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন
فَقَٰتِلُوٓا۟ أَوْلِيَآءَ ٱلشَّيْطَٰنِ
সুতরাং তোমরা ক্বিতাল করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে,

প্রশ্নঃ ত্বাগুতরা উপর থেকে জঙ্গি বিমানের মাধ্যমে , দূর পাল্লার মিজাইলের মাধ্যমে, জল পথে সাবমেরিনের মাধ্যমে আক্রমণ করে ও অত্যাধুনিক অস্ত্রের মাধ্যমে আক্রমণ করে এ মুহূর্তে আমরা কি করব?

উওরঃ তোমাদের নিকট যা আছে তা নিয়েই আক্রমণ কর।কারণ তাদের কলা-কৌশল
দুর্বল।আল্লাহ তা‘আলা বলেন
إِنَّ كَيْدَ ٱلشَّيْطَٰنِ كَانَ ضَعِيفًا
(দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল।

0 মন্তব্যসমূহ