মুজাহিদের ঘুম অন্যের এবাদতের সমতুল্য:
আর কীভাবে ঘরে বসে জিহাদের সওয়াব অর্জন করা সম্ভব, যেখানে রাত জেগে নামায ও দিনভরে রোযার ফযীলত মুজাহিদের ঘুমের সমান!
মাকহুল রহ. বর্ণনা করেন,
“এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, মানুষ জিহাদ করছে, অথচ আমি একটি সমস্যার কারণে বের হতে পারিনি। তাই আমাকে এমন এক আমল বাতলে দিন, যদ্দরুন আমি তাদের সাথে মিলিত হতে পারবো। রাসূল বললেন, তুমি কি (আল্লাহর এবাদতে) রাত্রিযাপন করতে পারবে?
মাকহুল রহ. বর্ণনা করেন,
جَاءَ
رَجُلٌ إلَى النَّبِيِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ : يَا
رَسُولَ اللهِ ، إنَّ النَّاسَ قَدْ غَزَوْا , وَحَبَسَنِي شَيْءٌ ,
فَدُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ يُلْحِقُنِي بِهِمْ ، قَالَ : هَلْ تَسْتَطِيعُ
قِيَامَ اللَّيْلِ ؟ قَالَ : أَتَكَلَّفُ ذَلِكَ ، قَالَ : هَلْ
تَسْتَطِيعُ صِيَامَ النَّهَارِ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، قَالَ : فَإِنَّ
إحْيَاءَك لَيْلَك وَصِيَامَك نَهَارَك كَنَوْمَةِ أَحَدِهِمْ.
“এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, মানুষ জিহাদ করছে, অথচ আমি একটি সমস্যার কারণে বের হতে পারিনি। তাই আমাকে এমন এক আমল বাতলে দিন, যদ্দরুন আমি তাদের সাথে মিলিত হতে পারবো। রাসূল বললেন, তুমি কি (আল্লাহর এবাদতে) রাত্রিযাপন করতে পারবে?
সাহাবী বললেন, আমি তা কষ্ট করে করবো। রাসূল বললেন, তুমি কি দিনে রোযা রাখতে
পারবে? সাহাবী বললেন, হ্যাঁ। রাসূল বলেন, (আল্লাহর এবাদতে) রাত্রিযাপন এবং
দিনে রোযা তাদের এক ব্যক্তির ঘুমের সমান। (তারা ঘুমিয়ে যে সওয়াব পাবে,
তুমি রাত্রিযাপন করে ও রোযা রেখে ততটুকু সওয়াব পাবে)[1]
বিশিষ্ট তাবেয়ী হাসান বিন আবুল হাসান রহ. বলেন,
“রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এক ব্যক্তির অনেক সম্পদ ছিল। সে
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল। হে
আল্লাহর রাসূল, আমাকে এমন আমল বাতলে দিন, যদ্দরুন আমি আল্লাহর রাস্তার
মুজাহিদদের আমলের সমপর্যায়ের সওয়াব পাবো। রাসূল তাকে বললেন, তোমার সম্পদ
কত?
أَنَّ
رَجُلًا كَانَ عَلَى عَهْدِ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ لَهُ مَالٌ كَثِيرٌ فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ
أُدْرِكُ بِهِ عَمَلَ الْمُجَاهِدِينَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، فَقَالَ: «كَمْ
مَالُكَ؟» قَالَ: سِتَّةُ آلَافِ دِينَارٍ، فَقَالَ: «لَوْ أَنْفَقْتَهَا
فِي طَاعَةِ اللَّهِ لَمْ تَبْلُغْ غُبَارَ شِرَاكِ الْمُجَاهِدِ فِي
سَبِيلِ اللَّهِ» وَأَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ
أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ أُدْرِكُ بِهِ عَمَلَ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ
اللَّهِ، فَقَالَ: «لَوْ قُمْتَ اللَّيْلَ وَصُمْتَ النَّهَارَ لَمْ
تَبْلُغْ نَوْمَ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ»
সে বলল, ছয় হাজার দীনার। রাসূল বলেন, যদি তুমি উক্ত সম্পদ পূরোটাই
আল্লাহর আনুগত্যে খরচ করো, তাহলে আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদের জুতার ফিতার
ধুলা পরিমাণও সওয়াব পাবে না। আরেক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করল। হে আল্লাহর
রাসূল, আমাকে এমন আমল বাতলে দিন, যদ্দরুন আমি মুজাহিদের আমলের সমপর্যায়ের
সওয়াব পাবো। রাসূল বলেন, যদি তুমি রাত জেগে এবাদত করো এবং দিন ভরে রোযা
রাখো, তাহলে আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদের ঘুমের সওয়াবও পাবে না।”[২]
এক
দীনার হচ্ছে বর্তমান হিসাব মতে ৪.২৫ গ্রাম। আর এক ভরি স্বর্ণ হচ্ছে ১১.৬৬
গ্রামে। এক ভরি স্বর্ণের বর্তমান মূল্য ১৪০,০০০ ধরলে এক দীনার এর মূল্য হবে
৫১,০০০ টাকা। উক্ত হিসাব মতে ৬,০০০ হাজার দীনারের মূল্য হবে ৩০৬,০০০,০০০
(ত্রিশ কোটি ষাট লক্ষ) টাকা। আল্লাহর রাস্তায় এতো টাকা দান করার চেয়ে একজন
প্রকৃত মুজাহিদের ঘুমের সওয়াব আরও বেশি।
[1] মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ: ১০/২৫৪। হাদীসটি মুরসাল, তবে মকহুল রহ. পর্যন্ত সনদ হাসান। -মাশারিউল আশওয়াক: ১/১৫৮
[২] সুনানে সাঈদ বিন মানসূর: ২/১৫০। হাদীসটি মুরসাল।
[1] মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ: ১০/২৫৪। হাদীসটি মুরসাল, তবে মকহুল রহ. পর্যন্ত সনদ হাসান। -মাশারিউল আশওয়াক: ১/১৫৮
[২] সুনানে সাঈদ বিন মানসূর: ২/১৫০। হাদীসটি মুরসাল।
0 মন্তব্যসমূহ