আল্লাহর হুকুম বাদ দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা কেন শির্ক

    আল্লাহর হুকুম বাদ দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা কেন শির্ক?



১️) তাওহীদুল হাকিমিয়াহ — শাসনে আল্লাহর একত্ব


তাওহীদুল হাকিমিয়াহ মানে—আইন প্রণয়ন ও শাসনের পূর্ণ অধিকার কেবল আল্লাহর।

সূরা ইউসুফ- ৪০

“হুকুম তো কেবল আল্লাহরই—তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, কেবল তাঁকেই ইবাদত করো।”


 অর্থ: আইন বানানোর অধিকার আল্লাহ ছাড়া কারো নেই। কেউ যদি আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে নিজের বা মানুষের বানানো আইন চালায়, সে শাসনে আল্লাহর একত্ব অস্বীকার করছে।


২️)আল্লাহর হুকুমের বিকল্প আইন চালানো = কুফর


সূরা মায়িদা -৪৪

“যারা আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান অনুযায়ী হুকুম করে না, তারাই কাফের।”

 সূরা মায়িদা ৪৫

“যারা আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান অনুযায়ী হুকুম করে না, তারাই জালিম।”

 সূরা মায়িদা -৪৭

“যারা আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান অনুযায়ী হুকুম করে না, তারাই ফাসিক।”


এখানে তিনটি শব্দ এসেছে—কাফির, জালিম, ফাসিক—যা একত্রে বোঝায় যে, আল্লাহর আইন অস্বীকার বা পরিবর্তন করা বড় গুনাহ, এমনকি ইমান নষ্টকারী শির্কও হতে পারে।


৩️) গণতন্ত্র কেন শির্কের অন্তর্ভুক্তঃ


গণতন্ত্রের মূলনীতি:

সার্বভৌমত্ব (সর্বশেষ আইন প্রণয়নের ক্ষমতা) মানুষের হাতে থাকে।

সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট ঠিক করে আইন কী হবে।

মানুষ চাইলে আল্লাহর হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল করতে পারে।


 সূরা তাওবা ৩১

 “তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের আলেম ও সাধুদের রব বানিয়ে নিয়েছে…”


রসূলুল্লাহ ﷺ ব্যাখ্যা করেছেন:

 “তারা আলেম ও সাধুদের ইবাদত করত না; বরং তারা যা হালাল করত, তা তারা হালাল মনে করত, এবং যা হারাম করত, তা তারা হারাম মনে করত—এটাই তাদের ইবাদত।”

(তিরমিযি ৩০৯৫)


গণতন্ত্রে জনগণ বা সংসদ যা হালাল-হারাম নির্ধারণ করে—এটি আসলে মানুষকে আইন প্রণেতা (রব) বানানো, যা শির্ক।


৪️)আল্লাহর আইন ত্যাগের পরিণতিঃ

সূরা নাহল ৩৬

আমরা প্রত্যেক জাতিতে একজন রাসূল পাঠিয়েছি এই বলে: আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত থেকে দূরে থাক।”


তাগুত মানে—যে কেউ আল্লাহর হুকুমের বাইরে শাসন চালায় বা শাসন মানতে বলে।

 সূরা বাকারা -১৭৪

“যারা আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাব গোপন করে এবং তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে, তারা তাদের পেটে আগুন ভরে।”


৫️) আধুনিক আলেমদের ভুল অবস্থানঃ


কিছু আলেম বলেন, “গণতন্ত্র ব্যবহার করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব।”

কিন্তু ইসলামে হারাম পদ্ধতি ব্যবহার করে হালাল লক্ষ্য অর্জন করা বৈধ নয়।

আবু দাউদ ২৬২৯:

 “যা হারাম, তা দিয়ে নেক কাজ সম্পন্ন করা যায় না।”

) চূড়ান্ত কথাঃ

গণতন্ত্রে বিশ্বাস = মানুষের হাতে আইন প্রণয়নের অধিকার দেওয়া = তাগুতকে মানা।

আল্লাহর হুকুম বাদ দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা বড় শির্ক, কারণ এতে শাসনে আল্লাহর একত্ব অস্বীকার হয়।

মুসলমানের কর্তব্য হলো আল্লাহর শরীয়াহ ভিত্তিক খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করা, মানুষের বানানো আইন নয়।

0 মন্তব্যসমূহ