ফুঁ দিয়ে এই চেরাগ নিভানো যাবে না!
ষষ্ঠ উদ্দেশ্য : উম্মাহর যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি
.
হে আমার ভাইয়েরা! হকের আন্দোলন, হেদায়েতের আন্দোলন এমন কার্যক্রম, যা মানুষকে হেদায়াতের দিকে নিয়ে আসে এবং মানুষের হেদায়েতের জন্য জালেমদের সাথে লড়াই করে। এগুলো অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইমাম ব্যতীত চলতে পারে না।
হকের আন্দোলনের জন্য প্রত্যেক যামানাতেই এবং প্রত্যেক স্তরে এমন কিছু
ব্যক্তি প্রয়োজন, যাদের একনিষ্ঠতা-ধৈর্য-দৃঢ়তা-স্থিরতা ও দ্বীনের জন্য
কুরবানি দেখে প্রত্যক্ষকারীরা হেদায়াতের দাওয়াত পেয়ে যাবে এবং তার
পরবর্তীতে আসা হকের পথিকদের দৃঢ়তা এবং স্থিরতার শিক্ষা হয়ে থাকবে। আল্লাহ
তা‘আলা আমাদেরকে দোয়া শিখিয়েছেন-
وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
আমাদেরকে মুত্তাকীদের ইমাম বানিয়ে দিন।
.
হেদায়াতের পথে ইমাম হওয়া অতি সহজ কাজ নয়। এই রাস্তা বিপদের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়।
وَإِذِ ابْتَلَى إِبْرَاهِيمَ رَبُّهُ بِكَلِمَاتٍ فَأَتَمَّهُنَّ
অর্থাৎ যখন আল্লাহ তা‘আলা ইব্রাহিমকে কিছু কাজের মাধ্যমে পরীক্ষা নিলেন, তখন তিনি তা পরিপূর্ণ করেন।
আল্লাহ তা‘আলা উনাকে বিপদের ঘাঁটিতে ফেলে দিয়েছিলেন, আর যখন তিনি তাতে পাশ করলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে বললেন,
قالَ إِنِّي جَاعِلُكَ لِلنَّاس إِمَامًا
অর্থাৎ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে লোকদের ওপর ইমাম বানিয়ে দেব।
.
এটা কখন বলেছেন? বিপদের সমুদ্র থেকে সফল হয়ে বের হওয়ার পর। হে ভাইয়েরা! সঠিক পথের উপর যখন কাউকে অনুসরণীয় এবং ইমাম বানানো হয়, যেন পরবর্তীরা এই অনুসরণীয় ব্যক্তিত্বকে দেখে নিজেদের অন্তরে দ্বীনের প্রতি ভালবাসা বৃদ্ধি করতে পারে, দ্বীনের উপর আমল করতে পারে, দিনের পথে বড় বড় কুরবানির জন্য নিজেকে পেশ করতে পারে, তখন এই সমস্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা বিপদের মধ্যে ফেলে পরীক্ষা করেন।
وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
আমাদেরকে মুত্তাকীদের ইমাম বানিয়ে দিন।
.
হেদায়াতের পথে ইমাম হওয়া অতি সহজ কাজ নয়। এই রাস্তা বিপদের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়।
وَإِذِ ابْتَلَى إِبْرَاهِيمَ رَبُّهُ بِكَلِمَاتٍ فَأَتَمَّهُنَّ
অর্থাৎ যখন আল্লাহ তা‘আলা ইব্রাহিমকে কিছু কাজের মাধ্যমে পরীক্ষা নিলেন, তখন তিনি তা পরিপূর্ণ করেন।
আল্লাহ তা‘আলা উনাকে বিপদের ঘাঁটিতে ফেলে দিয়েছিলেন, আর যখন তিনি তাতে পাশ করলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে বললেন,
قالَ إِنِّي جَاعِلُكَ لِلنَّاس إِمَامًا
অর্থাৎ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে লোকদের ওপর ইমাম বানিয়ে দেব।
.
এটা কখন বলেছেন? বিপদের সমুদ্র থেকে সফল হয়ে বের হওয়ার পর। হে ভাইয়েরা! সঠিক পথের উপর যখন কাউকে অনুসরণীয় এবং ইমাম বানানো হয়, যেন পরবর্তীরা এই অনুসরণীয় ব্যক্তিত্বকে দেখে নিজেদের অন্তরে দ্বীনের প্রতি ভালবাসা বৃদ্ধি করতে পারে, দ্বীনের উপর আমল করতে পারে, দিনের পথে বড় বড় কুরবানির জন্য নিজেকে পেশ করতে পারে, তখন এই সমস্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা বিপদের মধ্যে ফেলে পরীক্ষা করেন।
আব্দুর রশিদ গাজী রাহিমাহুল্লাহর দৃষ্টান্ত দেখুন।
তাকেও এই বিপদের ঘাঁটিতে ফেলা হয়েছিল, তখন তিনি দৃঢ় এবং স্থির হয়ে
গিয়েছিলেন, যার ফলে ইমাম হয়ে গেছেন। এই দৃষ্টান্ত যা তারা দেখিয়ে গেছেন,
যার ফলে পাকিস্তানের মাটিতে জিহাদের কার্যক্রম দৃঢ়ভাবে গেঁড়ে যায়।
.
যখন জান বাঁচানোর জায়েজ রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
.
আমার ভাইয়েরা! যখন মুমিনদের উপর পরীক্ষা আসে এবং তার জন্য জান বাঁচানোর সকল জায়েয রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, তখন সে এমন কোনো দরজায় করাঘাত করতে পারে না, যে দরজা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়।
.
যখন জান বাঁচানোর জায়েজ রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
.
আমার ভাইয়েরা! যখন মুমিনদের উপর পরীক্ষা আসে এবং তার জন্য জান বাঁচানোর সকল জায়েয রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, তখন সে এমন কোনো দরজায় করাঘাত করতে পারে না, যে দরজা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়।
সে এমন কোনো রাস্তায় বের হতে পারে না, যে
রাস্তায় জান বেঁচে যায়, কিন্তু ঈমান থেকে সে মাহরুম হয়ে যায়। এ কারণেই মুসা
আ. ও ফেরাউনের ঘটনায় যখন যাদুকররা ঈমান আনে আর ফেরাউন সেই নওমুসলিমদের উপর
চাপ প্রয়োগ করে- ‘ফিরে এসো! নিজ ধর্মে ফিরে এসো! ঐ দ্বীনকে ছেড়ে দাও! যদি
ফিরে না আস, দ্বীন পরিবর্তন না কর, আত্মসমর্পন না কর তাহলে জবাই হয়ে যাবে,
কতল হয়ে যাবে, সমস্ত শরীর টুকরো টুকরো হয়ে যাবে!’ তখন এই মুমিনরা এবং
নওমুসলিম আহলে ঈমানগণ কোন জিনিসের কামনা করেন?
তারা কী প্রার্থনা করেছেন?
তারা ফেরাউনের সামনে নতি স্বীকার করেনি। ক্ষমা ও নিরাপত্তা চায়নি। জীবন
ফিরে পাওয়ার প্রার্থনা করেনি। তারা বুঝে গিয়েছিল যে, ঈমান আনয়নের সাথে সাথে
বেঁচে থাকার সকল রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। তাই তাঁরা আল্লাহর কাছে ঈমানের উপর
অটল থাকা ও ঈমানের উপরেই মৃত্যুবরণের দোয়া করেছেন-
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ
হে আল্লাহ! আমাদেরকে ঈমানের উপর দৃঢ় রাখুন এবং এই ঈমানের সাথেই মৃত্যু দিন।
.
তাঁরা ঈমানের সাথে মৃত্যুর কামনা করেছেন। তাঁরা এমন জীবন কামনা করেননি, যে জীবনে চলাফেরা তো ঠিকই করা যায়, মুক্তি ও আজাদি তো মিলে, কিন্তু ঈমান থেকে মাহরুম হতে হয়।
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ
হে আল্লাহ! আমাদেরকে ঈমানের উপর দৃঢ় রাখুন এবং এই ঈমানের সাথেই মৃত্যু দিন।
.
তাঁরা ঈমানের সাথে মৃত্যুর কামনা করেছেন। তাঁরা এমন জীবন কামনা করেননি, যে জীবনে চলাফেরা তো ঠিকই করা যায়, মুক্তি ও আজাদি তো মিলে, কিন্তু ঈমান থেকে মাহরুম হতে হয়।
পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়ার মাদ্রাসা থেকে সনদ গ্রহণকারী ইমাম
.
পাকিস্তানে পরীক্ষার এই মাদ্রাসা দেখো! এই মাদরাসাতুল ইবতিলা (পরীক্ষার মাদ্রাসা) থেকে সনদ গ্রহণকারী ইমামদের দেখো! এই মাদ্রাসা কত ইমাম তৈরি করেছে। মাওলানা নিজামুদ্দীন শামযাই, মুফতী জামিলুর রহমান, গাজী শহীদ রহ. -এর পিতা মাওলানা আ. রশিদ গাজী রহ. ঐ সময় যখন সত্য বলা মৃত্যুর নামান্তর ছিল, তখন তারা ও তাদের ন্যায় অন্যরা ঐ সময়ের অনেক ইমাম, অনেক উলামা এই পরীক্ষার মধ্যে মাথা বিক্রি করেছেন আর ইমাম হয়ে গেছেন।
তারপর এই অল্প কয়েক
বছরের মধ্যে দেখুন এই পরীক্ষার পাত্র কেমন ইমামদের তৈরি করেছেন। মাওলানা
নসীব খান এর রহ. এর ব্যক্তিত্ব দেখুন, যিনি আকুরাহ খটক হক্কানিয়া -এর
শিক্ষক ছিলেন। মাওলানা আ. জাব্বার শাকের, ডা. ওসমান, মুমতাজ কাদরি (আল্লাহ
তা‘আলা তাঁদের উপর রহমত বর্ষণ করুন!) ‘নাওয়ায়ে আফগান’ পত্রিকার পরিচালক
হাফেজ তাইয়িব নওয়ায (হাফেজ আ. মতিন), এই মেজর ডা. তারেক, মেজর ও ডাক্তারদের
জন্য উপমা!
এই ইমামদের ফিরিস্তি সংক্ষিপ্ত কিছু নয়। এটা অনেক দীর্ঘ। যারা
পরীক্ষার পাত্র থেকে বের হচ্ছেন মাদ্রাসাতুল ইবতিলা থেকে তাঁরা সনদ
নিচ্ছেন। পাকিস্তান এজেন্সিগুলোর শাস্তির ও লাঞ্ছনার কামরা থেকে চামড়াছেলা
লাশ হয়ে বের হচ্ছেন। এ সকল ঘটনা এই পয়গামই দিয়ে যাচ্ছে যে, আমরা হলাম
দৃষ্টান্ত। হকের উপর অটল হয়ে যাও! আল্লাহর দ্বীনের জন্য দৃঢ় হয়ে যাও!
আল্লাহর দ্বীনের জন্য একত্র হয়ে যাও! আল্লাহর এই দ্বীনের জন্য ওয়ারিস তৈরি
করো! আর এরাই সেই ওয়ারিস, যা এই যুগে আমরা পেয়েছি। প্রত্যেক তবকায় পেয়েছি
আলহামদুলিল্লাহ!
পাকিস্তানের উপর, উপমহাদেশের উপর এটা অনেক বড় নেয়ামত। এটা
এই পরীক্ষার বরকত যে, আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত এই ভূখণ্ডের মুসলমানদের এই উপমা
পেশ করেছেন যে, এই উপমাদের পথে চলো! জান্নাতে যেতে চাও? আল্লাহর সন্তুষ্টি
লাভ উদ্দেশ্য? আল্লাহ তোমার মাহবুব? আল্লাহর মুহাব্বত চাও? রাস্তা হলো
এটা, আর এরা এর ইমাম। এই ইমামদের পেছনে চলো এবং হকের এই পথে অটল থাকো!
(আল্লাহ তাঁদের উপর ব্যাপক রহমত বর্ষণ করুন!) জিহাদের ময়দানে যারা দুশমনের
সামনে দৃঢ় থেকেছেন, তাদের উদাহরণও কম নয়।
‘অপারেশন জারবে আযব’ এর পূর্বে ও
পরে অনেক উদাহরণ রয়েছে। উস্তাদ আসলাম (কারী ইয়াসিন) রহ. ইমাম ছিলেন। অনেক
বড় উপমা ছিলেন। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন। তিনি আমাদের
অত্যন্ত প্রিয় ভাই ও বড় সম্মানিত ভাই ছিলেন। আমাদের উসামা ইব্রাহিম ভাই
(যার জিহাদি নাম জহির ভাই ও আমজাদ ভাই) আমাদের সকলের জন্য তাঁর জীবনীতেও
আদর্শ ছিল।
আর এখন যখন আল্লাহর কাছে চলে গেছেন, আল্লাহ তাদের বাছাই করেছেন;
তো উপমা হয়ে রয়েছেন। বাংলাদেশের আমাদের অত্যন্ত প্রিয়, বিশ্বস্ত,
সত্যবাদী, বাহাদুর ও সাহসিকতার ছবি, মহান নেতা সুহাইল ভাই (তারিক বাংলাদেশী
ভাই), হিন্দুস্তানের অত্যন্ত প্রিয় ভাই হায়দারাবাদ এলাকা থেকে এসেছেন এবং
এখানে এই কাফেলায় খুন ঢেলেছেন, মুহতারাম কারী উমর রহ. আল্লাহ তাঁদের উপর
ব্যাপক রহমত নাযিল করুন ও তাঁদের মতো অন্যদের উপর অনুগ্রহ করুন।
আল্লাহ
তা‘আলা আমাদেরকে এই কাফেলা থেকে এক মুহূর্তের জন্যও পৃথক না করুন। এই
কাফেলায় আমাদের দৃঢ়পদ রাখুন। আল্লাহ তা‘আলা এই সকল মুসলমানদেরকে যাদের
অন্তরে ইখলাস আছে, যারা আল্লাহর দ্বীনকে নুসরত করতে চায়, আল্লাহ তাদেরকে
জিহাদী কাফেলায় শামিল করুন।
নফসানি খাহেশাত : এক মারাত্মক পরীক্ষা
.
প্রিয় ভাইয়েরা! পরীক্ষার আরও একটি প্রকার আছে। উপরে যে প্রকার বর্ণনা করা হয়েছে সেটা তো মুশকিল, বিপদাপদ, সংকীর্ণতা ও কষ্টক্লেশ ইত্যাদির পরীক্ষা ছিল। আরও এক প্রকার পরীক্ষা আছে, যেটি এই সকল পরীক্ষা থেকে বেশি ভয়াবহ ও বেশি মুশকিল! এটা হলো মানুষের নফসের কামনা-বাসনার পরীক্ষা। তা হলো ধন-সম্পদ, ভোগ সামগ্রী, প্রসিদ্ধি, নেতৃত্বের মুহাব্বত ঈমান ও জিহাদের কষ্টের উপর অটল থাকার পরিবর্তে নিরাপত্তা ও শান্তিলাভের কামনার পরীক্ষা। আল্লাহর শপথ! নফসের এই কামনা ও মুহাব্বত অন্য সকল ফেতনা থেকে বেশি ভয়াবহ! বেশি ভারী! আবার তখন এই পরীক্ষা আরও বৃদ্ধি পায়, বেশি ভারি হয়ে যায়, যখন সফর দীর্ঘ হয় কিন্তু সাহায্য ও বিজয় অনেক দূর পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হয় না। বের তো হয়েছিল এই উদ্দেশ্যে যে, জুলুমের ভিত ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে; পাঁচ বছর, না হলে আট বা দশ বছরের মধ্যে কাবুল থেকে দিল্লি পর্যন্ত শরীয়তের ঝাণ্ডা দৃষ্টিগোচর হবে, কিন্তু যখন এই মঞ্জিল নজরে না আসে তো এমন মুহূর্তে খুব কম লোকেরাই অটল থাকতে পারে। নিজের সফর জারি রাখতে পারে। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আমাদের ও আপনাদের এর মধ্যে শামিল রাখুন! আমাদের দৃঢ় রাখুন!
.
পরীক্ষার সময় অটলতা প্রদর্শন করা মুজাহিদীনের গুণাবলী :
.
এমন পরীক্ষার সময়ে যারা দাঁড়িয়ে যায় ও দাঁড়িয়ে থাকে তারা ঈমানের হক আদায় করে। আমার ভাইয়েরা! ঈমান আল্লাহর আমানত। এই সপ্ত আকাশ উপর থেকে আল্লাহ তা‘আলার মহান আমানত। এবং এটা কেবল ঐ লোকেরাই উঠাতে পারে, যারা এর যোগ্য। ঐ মহান গুণাবলীর অধিকারী সৌভাগ্যবানদের অতিরিক্ত কিছু গুণ স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য পেশ করতে চাই।
.
আত্মসমর্পণ ও ইখলাস
.
আত্মসমর্পণ ও ইখলাসে পরিপূর্ণ লোকেরা নিজের কোনো ভালো গুণ, নিজের কোনো সৌন্দর্য, নিজের যোগ্যতার সম্বন্ধ নিজের দিকে করে না। যবানেও নয়, অন্তরেও নয়, এমনকি আমলের মাধ্যমেও নয়। সে মনে করে যে, আমার সৌন্দর্য, আমার যোগ্যতা, আমার কাজগুলো, আমার এই ছোট ছোট কাজ, এই সবকিছু আমার বাহুবলে ও নিজের শক্তির বদৌলতে নয়। এমন মুমিন ব্যক্তি لَا حَوْلَ ولا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰه، و ما توفِيقِيْ إِلَّا بِاللّٰ (লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ, ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা বিল্লাহ) এর উপর ঈমান রাখে যে, এ সকল যোগ্যতা আল্লাহ তা‘আলা দিয়েছেন।
.
প্রিয় ভাইয়েরা! পরীক্ষার আরও একটি প্রকার আছে। উপরে যে প্রকার বর্ণনা করা হয়েছে সেটা তো মুশকিল, বিপদাপদ, সংকীর্ণতা ও কষ্টক্লেশ ইত্যাদির পরীক্ষা ছিল। আরও এক প্রকার পরীক্ষা আছে, যেটি এই সকল পরীক্ষা থেকে বেশি ভয়াবহ ও বেশি মুশকিল! এটা হলো মানুষের নফসের কামনা-বাসনার পরীক্ষা। তা হলো ধন-সম্পদ, ভোগ সামগ্রী, প্রসিদ্ধি, নেতৃত্বের মুহাব্বত ঈমান ও জিহাদের কষ্টের উপর অটল থাকার পরিবর্তে নিরাপত্তা ও শান্তিলাভের কামনার পরীক্ষা। আল্লাহর শপথ! নফসের এই কামনা ও মুহাব্বত অন্য সকল ফেতনা থেকে বেশি ভয়াবহ! বেশি ভারী! আবার তখন এই পরীক্ষা আরও বৃদ্ধি পায়, বেশি ভারি হয়ে যায়, যখন সফর দীর্ঘ হয় কিন্তু সাহায্য ও বিজয় অনেক দূর পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হয় না। বের তো হয়েছিল এই উদ্দেশ্যে যে, জুলুমের ভিত ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে; পাঁচ বছর, না হলে আট বা দশ বছরের মধ্যে কাবুল থেকে দিল্লি পর্যন্ত শরীয়তের ঝাণ্ডা দৃষ্টিগোচর হবে, কিন্তু যখন এই মঞ্জিল নজরে না আসে তো এমন মুহূর্তে খুব কম লোকেরাই অটল থাকতে পারে। নিজের সফর জারি রাখতে পারে। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আমাদের ও আপনাদের এর মধ্যে শামিল রাখুন! আমাদের দৃঢ় রাখুন!
.
পরীক্ষার সময় অটলতা প্রদর্শন করা মুজাহিদীনের গুণাবলী :
.
এমন পরীক্ষার সময়ে যারা দাঁড়িয়ে যায় ও দাঁড়িয়ে থাকে তারা ঈমানের হক আদায় করে। আমার ভাইয়েরা! ঈমান আল্লাহর আমানত। এই সপ্ত আকাশ উপর থেকে আল্লাহ তা‘আলার মহান আমানত। এবং এটা কেবল ঐ লোকেরাই উঠাতে পারে, যারা এর যোগ্য। ঐ মহান গুণাবলীর অধিকারী সৌভাগ্যবানদের অতিরিক্ত কিছু গুণ স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য পেশ করতে চাই।
.
আত্মসমর্পণ ও ইখলাস
.
আত্মসমর্পণ ও ইখলাসে পরিপূর্ণ লোকেরা নিজের কোনো ভালো গুণ, নিজের কোনো সৌন্দর্য, নিজের যোগ্যতার সম্বন্ধ নিজের দিকে করে না। যবানেও নয়, অন্তরেও নয়, এমনকি আমলের মাধ্যমেও নয়। সে মনে করে যে, আমার সৌন্দর্য, আমার যোগ্যতা, আমার কাজগুলো, আমার এই ছোট ছোট কাজ, এই সবকিছু আমার বাহুবলে ও নিজের শক্তির বদৌলতে নয়। এমন মুমিন ব্যক্তি لَا حَوْلَ ولا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰه، و ما توفِيقِيْ إِلَّا بِاللّٰ (লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ, ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা বিল্লাহ) এর উপর ঈমান রাখে যে, এ সকল যোগ্যতা আল্লাহ তা‘আলা দিয়েছেন।
আল্লাহ তাওফীক না দিলে আমি কোনো সৌন্দর্য, কোনো
যোগ্যতা অর্জন করতে পারতাম না। এই লোকেরা নিজেকে এবং নিজের সবকিছু আল্লাহর
কাছে সোপর্দ করে দেয়। নিজের রজ্জুকে আল্লাহর হাওলা করে দেয় যে, আল্লাহ তাকে
যেদিকে ঘুরায় সে সন্তুষ্ট থাকে। তার মাকসাদই হলো আল্লাহ তা‘আলার
সন্তুষ্টি। বাকী আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের কেমন পরিবেশে রাখবেন, কোন ধরনের
রাস্তা দেবেন, পাহাড়ের উপর চড়াবেন, নাকি ময়দানে চালাবেন এটা আল্লাহর মর্জি।
সুতরাং সে وَ أُفَوِّضُ أَمرِيْ إِلٰى اللّٰهِ (আল্লাহ তা‘আলার কাছে নিজের
সবকিছু সোপর্দ করে দিলাম।) -এই বাণী উচ্চারণ করে। এমন লোকদের প্রশংসা
মানুষের করার প্রয়োজন হয় না।
সে মানুষের প্রশংসাবাণী পছন্দ করে না। সে
নিজের প্রশংসা শোনলে পলায়ন করে। কেউ তার প্রশংসা করুক -এটা সে পছন্দ করে
না, এর উপর সন্তুষ্টও হয় না। সে প্রশংসা লাভের আসায় মানুষের দিকে তাকায় না।
সে চায় না যে, মানুষ তার প্রশংসা করুক। এজন্য যে, সে কেবল আল্লাহকে
দেখানোর জন্য সব কিছু করে।
.
বিনয়:
.
এই লোকদের উপর যখন পরীক্ষা আসে, চাই তা নেয়ামত পাওয়ার আকৃতিতে হোক, বিজয় ও শক্তি অর্জনের সুরতে হোক অথবা নেয়ামত ছিনিয়ে নেওয়ার সুরতে হোক। উভয় সুরতে তার বিনয় বৃদ্ধি পায়। সে তার রবের সামনে ঝুকে পরে। নিজের রবের সামনে অক্ষমতা প্রকাশ করে এবং আল্লাহর বান্দাদের সামনেও সে বিনয়ী হয়ে যায়। সুতরাং এই অতিরিক্ত পরীক্ষা আল্লাহর নৈকট্য লাভের কারণ হয় এবং আল্লাহর বান্দাদের জন্যও সে আরও অধিক কোমল ও দয়ালু হয়ে যায়।
.
.
.
.
চলবে...
.
বিনয়:
.
এই লোকদের উপর যখন পরীক্ষা আসে, চাই তা নেয়ামত পাওয়ার আকৃতিতে হোক, বিজয় ও শক্তি অর্জনের সুরতে হোক অথবা নেয়ামত ছিনিয়ে নেওয়ার সুরতে হোক। উভয় সুরতে তার বিনয় বৃদ্ধি পায়। সে তার রবের সামনে ঝুকে পরে। নিজের রবের সামনে অক্ষমতা প্রকাশ করে এবং আল্লাহর বান্দাদের সামনেও সে বিনয়ী হয়ে যায়। সুতরাং এই অতিরিক্ত পরীক্ষা আল্লাহর নৈকট্য লাভের কারণ হয় এবং আল্লাহর বান্দাদের জন্যও সে আরও অধিক কোমল ও দয়ালু হয়ে যায়।
.
.
.
.
চলবে...
0 মন্তব্যসমূহ